যক্ষ্মা থেকে রক্ষা কিভাবে

যক্ষ্মা বা যক্ষা (ইংরেজি: Tuberculosis, টিউবার্‌কিউলোসিস্‌ বা টিবি) একটি সংক্রামক রোগ যার কারণ মাইকোব্যাক্টেরিয়াম টিউবারকিউলোসিস (Mycobacterium tuberculosis) নামের জীবাণু(Pathogen)। ২০১৮ সালে সারা বিশ্বে এই রোগে আক্রান্ত হয় এক কোটি মানুষ এবং মারা যায় ১৫ লাখ মানুষ ৷

ফুসফুসের  যক্ষ্মা একটি  মারাত্মক  ছোয়াচে রোগ। আক্রান্ত ব্যক্তির কাশির মাধ্যমে এই রোগ আপনারও হতে পারে। এখন করোনার প্রকোপের জন্য যক্ষ্মাকে অনেকেই ওভারলুক করে যাচ্ছেন। অনেক যক্ষ্মা রোগীর রোগ সঠিকভাবে নির্ণয় করা কঠিন হয়ে যাচ্ছে।

কখন বুঝবেন আপনার যক্ষ্মা হতে পারেঃ

১। ২ (দুই) সপ্তাহের মতো কাশি, গায়ে জ্বর থাকা। এই জ্বর সাধারণত কম মাত্রার হয়, সন্ধ্যারাতের দিকে জ্বর আসে, ১০০ বা ১০১ ডিগ্রির মতো জ্বর থাকতে পারে। শেষরাতের দিকে প্রচুর ঘাম দিয়ে জ্বর ছেড়ে যায়।  কাশির সাথে কফ যায়, প্রায় সারাক্ষণই একইরকম কাশি থাকে।।

২। কাশির সাথে রক্ত যাওয়া ।

৩।খাবারের অরুচি থাকে। 

৪। ধীরে ধীরে শরীরের ওজন কমে যেতে থাকে।

উপরের লক্ষণসমূহ আপনার বা আপনার আশেপাশের কারো দেখা দিলে দ্রুত স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে অথবা নিকটস্থ ব্র‍্যাকে যোগাযোগ করুন।। 

রোগ_নির্ণয়

যক্ষা রোগ নির্ণয়ের জন্য কফ পরীক্ষা করা হয়।। এই কফ পরীক্ষা সম্পূর্ণ বিনামূল্যে করা হয়। কফ পরীক্ষার জন্য নিকটস্থ স্বাস্থ্য কেন্দ্র বা ব্র‍্যাক থেকে ২ টি কফের বাটি সংগ্রহ করতে হয়। যেদিন পরীক্ষা করা হবে, সেদিন সকালে ঘুম থেকে উঠে বাসি মুখে কফ নিতে হয় ১ টা বাটিতে। সেই বাটি এবং অপর বাটি নিয়ে পরীক্ষাকেন্দ্রে গিয়ে সেখানে দ্বিতীয় বাটিতে কফ দিতে হয় আবার। কফ পরীক্ষার সাথে বুকের এক্সরে এবং রক্তের ESR দেখার মাধ্যমে অধিকাংশ যক্ষা রোগ ধরা পড়ে।। 

চিকিৎসা 

যক্ষা রোগীর চিকিৎসা সম্পূর্ণ বিনামূল্যে সরকারিভাবে করা হয়। সাধারণত ৬ মাসের ওষুধেই যক্ষা পুরোপুরি ভালো হয়ে যায়।

যেসকল যক্ষা রোগীর কফ পরীক্ষায় জীবাণু ধরা পড়ে, তাদের অবশ্যই পরিবারের সদস্যদের কাছ থেকে আলাদা থাকতে হবে অন্তত মাস খানেক এবং  আক্রান্ত রোগীদের অতি অবশ্যই মাস্ক ব্যবহার করতে হবে যাতে তাদের কাশির মাধ্যমে এই রোগ না ছড়ায়।

মনে রাখতে হবে, কারও শরীরে যক্ষ্মার সাধারণ লক্ষণসমূহ দেখা দিলে আর বিলম্ব না করে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে কারণ এই অবস্থায় যে কোন লোকেরই যক্ষ্মা রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেশি।

আসুন,সবাই যক্ষা রোগ নির্ণয়ে এবং নিয়ন্ত্রণে সক্রিয় ভূমিকা রাখি।

লেখক: ডাঃ ইয়াছিন মোহাম্মদ আলাউদ্দিন

বক্ষব্যাধি হাসপাতাল, ফৌজদারহাট, চট্টগ্রাম। 

টাইফয়েড সম্পকে জানুন।