আপনার জন্য সুখ কি?

আপনার-জন্য-সুখ-কি?
অনলাইন থেকে সংগৃহিত ছবি

সবাই সুখী হতে চায়। এই পৃথিবীতে এমন কাউকে পাওয়া যাবে না যে সুখী হতে চায় না। অনেকেই ভাবেন- অর্থকড়ি, শিক্ষা-দীক্ষা, বিবাহ, সন্তান-সন্ততি, পরিবার, সামাজিক ও অর্থনৈতিক প্রতিপত্তি মানুষকে সুখী করতে পারে। 

বিশ্বের বিভিন্ন দেশে জরিপ চালিয়ে দেখা গেছে, এসব অর্জন আসলে মানুষকে সুখী করতে পারে না। লাখ লাখ মানুষের জন্য প্রকৃত সুখ যেন সোনার হরিণ। 

অনেক মনোবিজ্ঞানী বলেন, সুখ হল জেনেটিক বা বংশানুগতিসম্বন্ধীয়। আবার কিছু বিজ্ঞানী তাদের বৈজ্ঞানিক আবিষ্কারের সূত্র ধরে বলেছেন, তারা মস্তিষ্কের এমন কিছু অংশ নির্ণয় করেছেন যেখান থেকে সুখ নিঃসৃত হয়।

সুখকে মাঝে মাঝে এক ধরনের স্বার্থিক উদ্দেশ্য বলে মনে করা হয়। মানুষের কী আছে- তার ওপর সুখ নির্ভর করে না। মানুষ কী ভাবে বা কিভাবে ভাবে- তার ওপর সম্পূর্ণভাবে নির্ভর করে সুখ। 

যার যা আছে বা যে অবস্থায় আছে তার জন্য শোকরিয়া জানিয়ে যদি দিন শুরু করা হয়- তাতে সুখ আসবে। মানুষ আজ যা ভাবছে তার ওপর ভিত্তি করে তার ভবিষ্যতের সুখ গড়ে উঠবে। সুতরাং কাজ-কর্ম ও চিন্তাধারায় পজিটিভ অ্যাপ্রোচ নিয়ে শুরু করলে জীবনে সুফল আসবে।

আত্মবিশ্বাসে বিশ্বাসী, মর্যাদাবান, হৃদয়বান, জ্ঞানী-গুণী, সৎ মানুষ সাধারণত সব সময় সুখী হয়। যারা শুধু নিতে চায়, দিতে জানে না বা চায় না, তারা সুখী হয় না।

প্রত্যেক অভিজ্ঞ মানুষই বলে থাকেন- সুখপ্রাপ্তির জন্য শর্টকাট কোনো রাস্তা নেই। পৃথিবীর সবচেয়ে সুখী মানুষরাও দিনের ২৪ ঘণ্টা সুখী হয় না বা থাকেন না। সুখী মানুষের জীবনেও হতাশা, দুঃখ-কষ্ট আসে। পার্থক্য হল সুখী মানুষরা হতাশা, দুঃখ-কষ্টকে সহজভাবে গ্রহণ করতে পারে। অন্যরা তা পারেন না।

সুখের বিপরীত শব্দ হলো অসুখ। যে সুখী নয়, সে সুস্থও নয়। অসুখ হতে পারে শারীরিক অথবা মানসিক। শারীরিক অসুস্থতায় ভুগলেও মানুষের জীবনে সুখ থাকে না।

আরও কিছু বাড়তি গুণাবলী অর্জন করলে মানুষ অধিকতর সুখী হতে পারে। সৃষ্টিকর্তার প্রতি আত্মসমর্পণ করুন ও নিয়মিত প্রার্থনা করুন। উৎসাহব্যঞ্জক হাস্যরসে ভরপুর ভালো বই-পুস্তক পড়ুন।

ছোটকাল থেকে বই-পুস্তকে পড়ে এসেছি- অর্থই অনর্থের মূল। অর্থ মানুষকে বেশি ব্যতিব্যস্ত রাখে, অর্থ মানুষের জীবনের কেন্দ্রবিন্দুতে চলে আসলে হানাহানি, দ্বন্দ্ব-সংঘাতের সৃষ্টি হয়। আমরা এও পড়েছিলাম- স্বাস্থ্যই সব সুখের মূল।

গরিব, দুঃখী ও দুস্থ মানুষকে দান করুন ও সেবাযত্ন করুন। এতে অনেক আত্মতৃপ্তি বাড়বে।
অন্যের প্রতি সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিন। গান-বাজনা মানুষের অপরিসীম আনন্দ ও সুখের উৎস হতে পারে। 

নেই বলে আক্ষেপ না করে আপনার যা আছে তার জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করুন। হাসুন এবং বেশি করে হাসুন। সবাইকে নিয়ে হাসি-খুশিতে থাকুন। তাহলে অবশ্যই আপনি সুখী ও সুস্থ থাকবেন বলে আমার বিশ্বাস।

আপনার জন্য সুখ কি?
  • আপনার জন্য সুখ কি? নিজের সুখকে নিজেই সংজ্ঞায়িত করুন। কারো কাছে আপনজন সুখ, কারো কাছে সাফল্য, আবার কারো কাছে অর্থ!
  • নিজের জীবনের প্রায়োরিটি লিস্ট রাখুন। সবসময় কিছু না পাওয়া থাকবেই,কিন্তু এই না পাওয়া আপনার লিস্টে সুখী হওয়ার জন্য কত নম্বরে?
  • অন্তরের প্রশান্তিকে খুঁজে বেড়ান। খুব ছোট ছোট জিনিসে সুখী হতে পারে,মন প্রশান্ত হতে পারে,আবার অনেক বড় অর্জনের পরও না হতে পারে।
  • সুখী থাকার সবচেয়ে মূল্যবান চাবিকাঠি হল- কৃতজ্ঞতাবোধ।
  • আল্টিমেট সুখ লাভের জন্য অবশ্যই ত্যাগ স্বীকার করতে হবে,তাই কষ্টকে সুখের অংশ হিসাবে দেখুন।
  • আপনার সুখ আপনার নিজের উপর নির্ভর করে,আপনার সাথে অন্য মানুষের আচরণের উপর নয়!
  • সুখ বলতে কিছু নাই,সব মরীচিকা - এটা সত্য নয়।
  • সুখ সন্তুষ্টির বাইপ্রোডাক্ট। তাই, নিজের জীবনে সন্তুষ্ট হতে শিখুন।
  • আপনাকে নিজের চারপাশে সুখ খুঁজে নিতে হবে,সুখ আপনাকে খুঁজে নিবে না।
  • মানুষের উপকার করুন। নিঃস্বার্থভাবে কিছু দেয়ায় একটা অদ্ভুত সুখ নিহিত আছে!