ছবিঃঅনলাইন
গর্ভবতী মায়েরা বেশিরভাগ সময়ে আল্ট্রাসনোগ্রাম করতে আসেন ৭ মাস/৮ মাসের সময়।
এতো দেরিতে কেন আসলেন প্রশ্ন করলে উত্তর আসে,
"কি বাবু সেটা তো এখনই ভালো বুঝা যাবে।"
নিয়মিত ফলোআপে আসা রোগীকে যদি ৩ মাসের সময় বলা একটা আল্ট্রা করে ফেলেন। উত্তর আসে,
"এখন না । ৭/৮ মাসের সময় করাবো।"
এমন হয়ে দাড়িয়েছে ব্যপারটা আল্ট্রাসনোগ্রামের একমাত্র লক্ষ্য গর্ভের সন্তানের লিঙ্গ জানা। কিন্তু সত্যিই কি তাই? আল্ট্রাসনোগ্রাম মেশিন এতো কষ্ট করে, এতো বছরের অক্লান্ত পরিশ্রম করে তৈরি, কি শুধুই ছেলে না মেয়ে জানার জন্য?
যে কয়েকবার ডাক্তাররা আল্ট্রা করায় সেটার কি সত্যিই দরকার আছে ?
সব টাকা খাওয়ার ধান্দা নাকি ?
আজকে জানবো গর্ভকালীন সময়ে আল্ট্রাসনোগ্রাম করার উদ্দেশ্য। অন্তত ৩ বার আল্ট্রাসনোগ্রাম করা উচিত।
১ম আল্ট্রাসনোগ্রাম করাতে হবে ৩মাসের মধ্যে। ২য় মাসে করানো সবচেয়ে ভালো। এসময় আমরা জানতে পারবো-
- রোগী আসলেই গর্ভবতী কিনা।
- অনেক সময় দেখা যায় প্রস্রাব টেস্টে পজিটিভ দেখালেও আসলে গর্ভে সন্তান নেই। অনেক সময়ই শুধুমাত্র বাচ্চার থলি আসে কিন্তু বাচ্চা থাকেনা।
- বাচ্চা জরায়ুতে আছে নাকি অন্য কোথাও। জরায়ুতে না থেকে অন্য কোথাও থাকাকে বলে এক্টপিক প্রেগন্যান্সি। এ ক্ষেত্রেও প্রস্রাব টেস্ট পজিটিভ আসে। কিন্তু বাচ্চা বেশিদিন বাঁচে না।
- বাচ্চা কি গর্ভে একটি নাকি একের অধিক।
- অনেকে মাসিকের তারিখ মনে রাখতে পারেনা। এসময়ই বাচ্চার বয়স জানা যায়।
- মায়ের জরায়ুতে কোন সমস্যা আছে কিনা। সমস্যা থাকলে অনেক সময় গর্ভপাত হয়ে যায়।
- বাচ্চার কোন জন্মগত ত্রুটি আছে কিনা। আগে থেকে জানা থাকলে সে অনুযায়ী বাচ্চার ডেলিভারির পরপরই চিকিৎসার ব্যবস্থা করা যায়।
- প্লাসেন্টা যেটা অনেকেই ফুল নামে জানে তার অবস্থান কোথায়। প্লাসেন্টার অবস্থানের উপর ডেলিভারি কতটা নিরাপদ হবে বুঝা যায়। অনেক মা ই ডেলিভারির পর অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে মারা যায়। তার কারণ হলো আগে থেকে প্লাসেন্টার অবস্থান না জেনে ব্যবস্থা নিতে না পারা।
- ডেলিভারির তারিখ কবে তা জানা যায়।
- বাচ্চা জীবিত কিনা।
- বাচ্চার ওজন;
- জরায়ুতে পানি কতটা আছে। পানি কম থাকলে বাচ্চা প্রয়োজনীয় পুষ্টি ও অক্সিজেন পায়না।এতে বাচ্চার নির্দিষ্ট ডেলিভারির তারিখ পর্যন্ত বেচে থাকা কঠিন। তাই বলে অতিরিক্ত পানি থাকাও ভালোনা।
- প্লাসেন্টাতে কোন সমস্যা আছে কিনা।
- বাচ্চার পজিশন। সাধারণত মাথা নিচের দিকে থাকলে নরমাল ডেলিভারি করা সহজ।
বরং যা জানতে পারলে মা ও সন্তানের সুস্থ থাকা আরেকটু নিশ্চিত করতে পারবেন তা জানুন। মায়ের যত্ন নিন। একজন সুস্থ মা ই জন্ম দিবেন একজন সুস্থ বাচ্চা।