‘মধ্যবিত্ত’ আত্মহত্যা করা বিজিবি সদস্য ফেসবুক আইডিতে পাওয়া পোস্টে থেকে!

‘মধ্যবিত্ত’-আত্মহত্যা-করা-বিজিবি-সদস্য-ফেসবুক-আইডিতে-পাওয়া-পোস্টে-থেকে!

আত্মহত্যা করা বিজিবি সদস্য সোহরাব হোসেন চৌধুরীর ফেসবুক আইডিতে পাওয়া পোস্টে থেকে
- ‘মধ্যবিত্ত পরিবারে জন্ম নিয়ে ভালো কিছু আশা করা মহাপাপ। নামে সরকারি চাকরি, কিন্তু বেতনটা ওই নামের ওপরই। সাত বছর চাকরি, এখনও বাড়িতে গেলে ঠিকমতো একটু কোথাও যাওয়া হয় না। ছুটির সময়টাও চোরের মতো থাকতে হয়। গত কিছুদিন আগে আম্মু খুব অসুস্থ হয়ে পড়ল। মায়ের চিকিৎসার জন্য ঢাকায় নিয়ে গেলাম, পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর মায়ের জন্য ওষুধ কিনব, সে টাকা আর হাতে নেই। পরে মামার কাছ থেকে ধার নিয়ে মাকে কিছু ওষুধ আর গাড়ি ভাড়া দিলাম। এমনটা প্রতিমাসেই হতে থাকে। না পারি নিজের খুশি মতো একটা জিনিস কিনতে, কিংবা একটা রেস্টুরেন্টে গিয়ে ভালো কিছু খেতে, না পারি পরিবারের চাহিদা পূরণ করতে। তার মধ্যে বর্তমান বাজারের যা পরিস্থিতি, এতে বাজার করা কিংবা সংসার চালানো কতটা কঠিন, বোঝানোর মতো না। ছোট ভাইটা শারীরিকভাবে কিছুটা অক্ষম। তার জন্য কিছু করব, তার সুযোগ হয়নি এই জীবনে। এমন পরিস্থিতিতে মানুষ প্রশ্ন করে, বিয়ে করি না কেন। কিন্তু মানুষকে তো আমার সরকারি চাকরির ভেতরটা দেখাতে পারি না। আমার বেতন, আমার সুযোগ-সুবিধা, সেভিংস এই সব কিছুতে অন্য একটা মানুষকে আনা আমার জন্য মরার উপর খাঁড়ার ঘা। তাই বিয়ে-শাদীর চিন্তা করিওনা। শুধু খেয়ে-পড়ে বেঁচে থাকতে পারলে খুশি—এমন চাইলাম, তাও আর হয়ে উঠল না। সাতটা বছর মানসিক যন্ত্রণা আর অভাবের সঙ্গে যুদ্ধ করতে করতে সত্যি বড় ক্লান্ত হয়ে পড়ছি। এবার একটু রেস্ট দরকার।

আমার পরিবার-সহকর্মী, সিনিয়র-জুনিয়র, আমার বন্ধুদের কাছে ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি, এই নিকৃষ্ট কাজের জন্য পারলে ক্ষমা করবেন। এই ছাড়া বিকল্প কোনো পথ আমার ছিল না।’সোহরাবের ফেসবুক আইডিতে পাওয়া পোস্টে লেখা হয়, ‘মধ্যবিত্ত পরিবারে জন্ম নিয়ে ভালো কিছু আশা করা মহাপাপ। নামে সরকারি চাকরি, কিন্তু বেতনটা ওই নামের ওপরই। সাত বছর চাকরি, এখনও বাড়িতে গেলে ঠিকমতো একটু কোথাও যাওয়া হয় না। ছুটির সময়টাও চোরের মতো থাকতে হয়। গত কিছুদিন আগে আম্মু খুব অসুস্থ হয়ে পড়ল। মায়ের চিকিৎসার জন্য ঢাকায় নিয়ে গেলাম, পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর মায়ের জন্য ওষুধ কিনব, সে টাকা আর হাতে নেই। পরে মামার কাছ থেকে ধার নিয়ে মাকে কিছু ওষুধ আর গাড়ি ভাড়া দিলাম। এমনটা প্রতিমাসেই হতে থাকে। না পারি নিজের খুশি মতো একটা জিনিস কিনতে, কিংবা একটা রেস্টুরেন্টে গিয়ে ভালো কিছু খেতে, না পারি পরিবারের চাহিদা পূরণ করতে। তার মধ্যে বর্তমান বাজারের যা পরিস্থিতি, এতে বাজার করা কিংবা সংসার চালানো কতটা কঠিন, বোঝানোর মতো না। ছোট ভাইটা শারীরিকভাবে কিছুটা অক্ষম। তার জন্য কিছু করব, তার সুযোগ হয়নি এই জীবনে। এমন পরিস্থিতিতে মানুষ প্রশ্ন করে, বিয়ে করি না কেন। কিন্তু মানুষকে তো আমার সরকারি চাকরির ভেতরটা দেখাতে পারি না। আমার বেতন, আমার সুযোগ-সুবিধা, সেভিংস এই সব কিছুতে অন্য একটা মানুষকে আনা আমার জন্য মরার উপর খাঁড়ার ঘা। তাই বিয়ে-শাদীর চিন্তা করিওনা। শুধু খেয়ে-পড়ে বেঁচে থাকতে পারলে খুশি—এমন চাইলাম, তাও আর হয়ে উঠল না। সাতটা বছর মানসিক যন্ত্রণা আর অভাবের সঙ্গে যুদ্ধ করতে করতে সত্যি বড় ক্লান্ত হয়ে পড়ছি। এবার একটু রেস্ট দরকার।


আমার পরিবার-সহকর্মী, সিনিয়র-জুনিয়র, আমার বন্ধুদের কাছে ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি, এই নিকৃষ্ট কাজের জন্য পারলে ক্ষমা করবেন। এই ছাড়া বিকল্প কোনো পথ আমার ছিল না।’