ব্যক্তি মালিকানায় থাকা গাছ কাটতেও অনুমতির বিধান রেখে বাংলাদেশ বনশিল্প উন্নয়ন করপোরেশন আইনের খসড়ায় অনুমোদন দিয়েছে সরকার।
সোমবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে মন্ত্রিসভার বৈঠকে নতুন এই আইন করার প্রস্তাবে অনুমোদন দেওয়া হয়। বৈঠকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে যুক্ত ছিলেন সরকার প্রধান।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম পরে সাংবাদিকদের বলেন, “মানুষ যারা সাধারণ বাগান করবে বা স্থায়ী যে গাছ লাগাবে, সেগুলোও তারা তাদের ইচ্ছামত কাটতে পারবে না। পৃথিবীর প্রায় সব দেশেই এরকম নিয়ম আছে।
“সৌদি আরবে ইউ ক্যানট ইমাজিন। আমার বাড়িতে একটা গাছ পড়ে গেছে, এটা আমি সিটি করপোরেশন বা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া কাটতে পারব না। এটা ভারতেও আছে। এটাকে ভালোভাবে ইমপ্লিমেন্ট করতে বলা হয়েছে।”
দেশের সব বনাঞ্চলকে সুরক্ষা দিতে এ আইন করা হচ্ছে জানিয়ে আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, “সামাজিক বনায়নের যেসব গাছ রয়েছে, সেগুলোও এর আওতায় আসবে। এখানে বুঝতে হবে, স্থায়ী গাছের কথা বলা হয়েছে। লাউ গাছ কাটতে কোনো সমস্যা নাই।
“আমি যতটুকু জানি, আগেও এরকম একটি নিয়ম ছিল। এটাকেই একটু সহজ করে কর্তৃপক্ষকে অনুমতি দিতে বলা হয়েছে। কারণ একটা মানুষ বিপদে পড়ল, তার গাছ ভেঙে গেল, এটা যদি সাত দিন পরে থাকে, সময় লাগে অনুমতি নিতে, সেটা হলে তো মুশকিল। তাই এটাকে একটু সহজ করতে বলা হয়েছে, এটা অনলাইনে করা যায় কিনা।”
পাকিস্তান আমলে ১৯৫৯ সালে একটি অধ্যাদেশের মাধ্যমে ‘পূর্ব পাকিস্তান বনশিল্প উন্নয়ন কর্পোরেশন’ নামে একটি স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান গঠিত হয়। ১৯৭২ সালে রাষ্ট্রপতির আদেশে এর নাম বদলে হয় ‘বাংলাদেশ বনশিল্প উন্নয়ন কর্পোরেশন’।
এ বিষয়ে ব্যাপক প্রচারের উদ্যোগ নিতে বলা হয়েছে জানিয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, “কেবিনেট থেকে বলা হয়েছে, পরিবেশ মন্ত্রণালয় এই আইনগুলোর কমপালশনগুলো বাস্তবায়নের আগে প্রোমশন ক্যাম্পেইন করে মানুষের দৃষ্টিতে আনতে হবে।”
কোথাও গাছ কাটা হলে সেটা পূরণের উদ্যোগও যে নেওয়া হচ্ছে, সে কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, “এলেঙ্গা থেকে যে রোডটা হল হাটিকুমরুল পর্যন্ত, সেখানে ৭৫ হাজার গাছ কাটতে হয়েছে যখন ফোর লেন রোড করা হল। কিছু তো করার নেই। ৭৫ হাজার গাছ কাটা হয়েছে। আমি নিজে আড়াই লাখ গাছ বুনে এসেছি এটার জন্য। আগেই বোনা শুরু করে দিয়েছি। আমি শুরু করে দিয়ে এসেছি, আমার ধারণা এগুলো এতদিনে বোনাও হয়ে গেছে। সুতরাং ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। যেটা আবশ্যিক, সেটা তো করতে হবে।”
কক্সবাজারে সংরক্ষিত বনাঞ্চলে বিসিএস প্রশিক্ষণ একাডেমির জায়গা বরাদ্দের বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে সচিব বলেন, এর ‘পুরোটা’ তিনি জানেন না।
“এ্টা জনপ্রশাসন দেখছে। আমি যতটুকু দেখেছি, যে জায়গায় গাছ নেই সেখানে স্থাপনা গুলো হবে। গাছ কাটলে বনের অনুমতি নিয়ে কীভাবে ক্ষতিপূরণ করা যায়, সেটা করতে হবে। সরকারি প্রকল্পে ক্ষতিপূরণের বিধান রাখা হয়, বাজেটও থাকে।”