দুই দিন ধরে অবরোধে, জনভোগান্তি

দুই দিন ধরে অবরোধে, জনভোগান্তি
ছবি-সংগৃহিত

গাজীপুরের সালনা এলাকার একটি কারখানা থেকে কাপড় তৈরির সুতা নিয়ে ঢাকার সাভারের আশুলিয়া যাওয়ার কথা কাভার্ড ভ্যানচালক মো. আবুল বাশারের। আজ রোববার সকাল আটটায় আবদুল্লাহপুর বাসস্ট্যান্ড থেকে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক ধরে সালনার উদ্দেশে রওনা দেন তিনি। কিন্তু টঙ্গীর স্টেশনরোড পর্যন্ত যেতেই যানজটে আটকা পড়েন। অনেক ঠেলেঠুলে দুপুর ১২টায় পৌঁছান নগরের তারগাছ এলাকায়। কিন্তু এরপর আর গাড়ি এগোচ্ছে না। দেড় ঘণ্টা ধরে আটকে থাকেন একই জায়গায়।

ঢাকার খিলক্ষেতের একটি বহুজাতিক প্রতিষ্ঠানে চাকরি করেন শ্রীপুরের রাজাবাড়ীর বাসিন্দা মো. আমিনুল ইসলাম। গত শুক্র ও শনিবার সাপ্তাহিক ছুটি কাটিয়ে আজ সকাল সাতটায় রওনা দেন ঢাকার উদ্দেশে। কিন্তু চান্দনা চৌরাস্তা পর্যন্ত আসতেই যানজটে আটকা পড়ে বাস। প্রায় ২ ঘণ্টা পরও বাস সামনে এগোচ্ছিল না। উপায়ন্তর না পেয়ে আমিনুল হেঁটেই রওনা দেন ঢাকার উদ্দেশে।

হাজারো মানুষের ভোগান্তির এ চিত্র ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে। তিন মাসের বকেয়া বেতনের দাবিতে গতকাল শনিবার ও আজ রোববার দিনভর নগরের মালেকের বাড়ি এলাকায় মহাসড়ক অবরোধ করে রেখেছেন স্থানীয় টিএনজেড অ্যাপারেলস লিমিটেড নামের একটি কারখানার শ্রমিকেরা। এতে ভোগান্তিতে পড়েন সড়কটিতে চলাচলকারী বিভিন্ন শ্রেণি–পেশার হাজার হাজার মানুষ।

বেলা তিনটায় দেখা যায়, এখনো মহাসড়কের মালেকের বাড়ি এলাকায় বিক্ষিপ্তভাবে অবস্থান করছেন কয়েক শ শ্রমিক। তাঁরা সড়কের উভয় দিক থেকে যান চলাচল বন্ধ করে দিয়েছেন। এতে ময়মনসিংহমুখী সড়কে মালেকের বাড়ি থেকে ঢাকার বিমানবন্দর ও ঢাকামুখী সড়কের সালনা পর্যন্ত যানজট তৈরি হয়েছে। যানবাহন চলাচল না করায় হাজার হাজার মানুষ হেঁটে বা বিকল্প মাধ্যমে রওনা দিচ্ছেন গন্তব্যে। অনেক যানবাহন নির্দিষ্ট গন্তব্যে যেতে ব্যবহার করছেন নগর এলাকার বিভিন্ন গলিপথ ও শাখা সড়ক। এতে সেসব সড়কেও দেখা দিচ্ছে যানজট।

দেখা যায় সড়ক অবরোধ থাকায় কিছু যানবাহন টঙ্গী স্টেশন রোড থেকে টঙ্গী-ঘোড়াশাল আঞ্চলিক সড়ক দিয়ে যাচ্ছে গাজীপুরের দিকে। আবার ঢাকামুখী গাড়িগুলো ব্যবহার করছে জয়দেবপুর সড়ক, বনমালা সড়ক, ভোগড়া বাইপাস সড়ক ও তিন সড়কসহ বিভিন্ন শাখা রাস্তা। এতে পুরো নগরেই থেমে থেমে দেখা দিচ্ছে যানজট।

এদিকে সড়কটির বিভিন্ন অংশে ট্রাফিক পুলিশ সদস্যকে দায়িত্ব পালন করতে দেখা যায়। তবে সড়কে যানজট থাকায় তাঁরা ঠিকমতো কাজ করতে পারছিলেন না। অধিকাংশ ট্রাফিক পুলিশ সদস্যই যানবাহনগুলোকে বিকল্প রাস্তায় পাঠানোর চেষ্টা করছিলেন। কিন্তু সেসব রাস্তায়ও যানবাহনের চাপ থাকায় যানজট কমছিল না।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন