বিভিন্ন দুর্ঘটনার চেয়েও বেশি মানুষ মারা যাচ্ছে ওষুধের ‘ওভারডোজে’!

overdose_overdose

এপ্রিল ২০২০ সালের থেকে এ বছরের এপ্রিল মাস পর্যন্ত ১২ মাসে শুধুমাত্র ওষুধের ওভারডোজের কারণে ১ লাখেরও বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে। এই মৃত্যুহার ঠিক এক বছর আগের হারের চেয়ে সাড়ে ২৮ গুণ বেশি। গত ১৭ নভেম্বর বুধবার ইউএস সেন্টার ফর ডিজিস কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন (সিডিসি) কর্তৃক প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে এমনই সব তথ্য।

সিডিসি’র ন্যাশনাল সেন্টার ফর হেলথ স্ট্যাটিসটিক্স জানাচ্ছে, ফেনটাইলের মতো অজৈব অপয়েড প্রধানত এই বর্ধনশীল মৃত্যুহারের জন্য দায়ী। উল্লেখ্য, ঝুঁকিপূর্ণ মরফিনের থেকেও ১০০ গুণ শক্তিশালী এটি। বেশিমাত্রায় অজৈব অপয়েড সেবনের কারণে বছরে ৬৪ হাজার মৃত্যু ঘটেছে। জন হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণা বলছে, করোনাকালে মৃত্যুর ৭ লাখ ৬৬ হাজার কেস ছিল শুধু ওভারডোজে মৃত্যু!

এমন অনাকাঙ্ক্ষিত উর্ধ্বমুখী গ্রাফে স্বভাবতই দুশ্চিন্তা প্রকাশ করছে মার্কিন প্রশাসন। প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ইতোমধ্যেই একে ‘মর্মান্তিক মাইলফলক’। তিনি বলেন, বিদেহীদের জন্য আমাদের শোকসন্তাপ ও তাদের স্মৃতির প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা থেকে ড্রাগ আসক্তি ও ওভারডোজের দুর্গতি কাটিয়ে উঠতে সব কিছু করতে আমার প্রশাসন দৃঢ় প্রতিজ্ঞ।

কোভিড মহামারীর কারণে কেবল ঝুঁকিপূর্ণ ওষুধ বাজারে সহজলভ্য হচ্ছে, তা-ই নয়, সেগুলোর প্রতি মাত্রাতিরিক্ত নির্ভরতাও বাড়ছে। উপরন্তু সামাজিক বিচ্ছিন্নতা তৈরির কারণে সেসব ওভারডোজে আসক্ত বা আক্রান্ত ব্যক্তিরা সুস্থ জীবনে ফেরার সুযোগও পাচ্ছেন না।

সিডিসি বলছে, শুধু ২০২০ সালে ওষুধের ওভারডোজে মারা গেছে অন্তত ৯৩ হাজার মানুষ। যা কিনা গাড়ি দুর্ঘটনা ও বন্দুক হামলায় ঘটা মৃত্যুর চেয়েও সংখ্যায় বেশি। ফলে করোনা মহামারীর সমান্তরালে নতুন মহামারীও পার করছে বিশ্ব- ওভারডোজ মহামারী!

চিকিৎসক ও ফার্মাসিস্টদের ব্যবস্থাপত্রে ১৯৯০ সাল থেকে অপিওয়েড, ২০১০’র দিক থেকে হেরোইনের আধিক্য বাড়ার সাথে সাথে ২০১৩ সাল থেকে যোগ হচ্ছিল ফেনটাইল। আর এই সবগুলো মিলেই জটিল থেকে জটিলতর করছে ওভারডোজ মহামারীর পরিস্থিতি। সূত্র: আল জাজিরা।