পিরিয়ডের দিন গণনার সাথে নিরাপদ মিলন এবং জন্মনিয়ন্ত্রণের সম্পর্ক

পিরিয়ডের-দিন-গণনার-সাথে-নিরাপদ-মিলন-এবং-জন্মনিয়ন্ত্রণের-সম্পর্ক

জেনে নেওয়া যাক, পিরিয়ডের সঙ্গে নিরাপদ মিলন (সেফ সেক্স) কোনো সম্পর্ক আছে কি না। মিলনের পর স্পার্ম বা শুক্রাণু নারীর জরায়ুর ভেতর পাঁচ দিন পর্যন্ত থাকতে পারে। স্পার্ম জরায়ুতে সাধারণত তিন দিনের বেশি টেকে না। ওই তিন দিনের যেকোনো এক দিন যদি ডিম্বাশয় ডিম্বাণু উৎপন্ন করে, সেই ডিম্বাণু ডিম্বনালির ভেতর দিয়ে জরায়ুতে পৌঁছে শুক্রাণু দ্বারা নিষিক্ত হয়। তখন এই নারী গর্ভবতী হয়। এখন প্রশ্ন হলো, কখন ডিম্বাশয় ডিম্বাণু উৎপাদন করে।

পিরিয়ডের মানে হলো ওই নারী ডিম্বাণু উৎপাদন করতে সক্ষম। তবে এর ব্যতিক্রমও আছে। পিরিয়ড হয়েছে মানেই যে ডিম্বাশয় ডিম্বাণু উৎপাদন করেছে, এমনটা না-ও হতে পারে। সাধারণত ডিম্বাণু যতক্ষণে পরিপক্ব হয়, ততক্ষণে জরায়ু রাসায়নিক সংকেত পেয়ে ভেতরে একটা নরম, পুরু আবরণের সৃষ্টি করে। ডিম্বাণু নিষিক্ত না হলে সেটা নষ্ট হয়ে যায়। আর আবরণসহ সবটা ভেঙে গিয়ে পিরিয়ডের রক্ত আকারে বের হয়ে যায়।

সাধারণত দুবার পিরিয়ডের মাঝামাঝি সময়ে ডিম্বাণু পূর্ণাঙ্গ হয়। সাধারণভাবে পিরিয়ড শুরুর ১৪তম দিনে বা এর আশপাশের সময়ে ডিম্বাশয় ডিম্বাণু উৎপাদন করে। পূর্ণাঙ্গ ডিম্বাণু জরায়ুতে ১২ থেকে ২৪ ঘণ্টা পর্যন্ত কার্যকর থাকে। তাই সেই সময়টা গর্ভধারণের জন্য সবচেয়ে উর্বর। সাধারণভাবে ধরা হয়, পিরিয়ডের শুরুর দিন থেকে ধরলে ৯ থেকে ১৯তম দিনের মাঝে, অর্থাৎ এই ১০ দিনের যেকোনো দিন জরায়ুতে শুক্রাণু থাকলে নিষিক্ত হতে পারে।

তবে কি এই ১০ দিন বাদে অন্য সময় যৌন সম্পর্ক স্থাপন করা নিরাপদ?

উত্তর হলো, না, নিরাপদ নয়। তবে অন্য দিনগুলোতে কোনো সুরক্ষা ব্যবস্থা ছাড়া মিলন করলে গর্ভবতী হয়ে পড়ার সম্ভাবনা কম। তবে পুরোপুরি নিরাপদ, এটা বলা যাবে না। কেননা, ডিম্বাশয় যে ৯ থেকে ১৯তম দিনের মাঝেই ডিম্বাণু উৎপাদন করবে, এমন কোনো কথা নেই। এটা নানা কারণে এগোতে বা পেছাতে পারে। ধরুন আপনি পিরিয়ডের শেষ দিকে সহবাস করেছেন, আর সেই মাসে ডিম্বাশয় আগে আগেই ডিম্বাণু উৎপাদন করেছে। আর শুক্রাণু তো পাঁচ দিন পর্যন্ত থাকেই। সে ক্ষেত্রে নিষিক্ত হওয়ার একটা সম্ভাবনা থেকেই যায়। টেনশন বা দুশ্চিন্তা, ডায়েট, ভারী শরীরচর্চা এগুলো ডিম্বাশয়কে ডিম্বাণু উৎপাদনের ক্ষেত্রে প্রভাবিত করতে পারে। তাই অনাকাঙ্ক্ষিত গর্ভাবস্থা এড়াতে জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি ব্যবহারের কোনো বিকল্প নেই।

তথ্যসূত্র: হেলথলাইন