এই উপহার দেশের মানুষের জন্য: মারিয়া মান্ডা

সাফ-অনূর্ধ্ব-১৯-চ্যাম্পিয়নশিপ
ছবিঃসংগৃহিত

খেলা শেষের বাঁশি বাজতেই আলিঙ্গণে বাঁধতে শুরু করলেন একে অন্যকে। বাধনহারা উল্লাসে গর্জে উঠল গ্যালারি। মেয়েদের সাফ অনূর্ধ্ব-১৯ চ্যাম্পিয়নশিপের শিরোপা দেশবাসীর জন্য বলে জানালেন বাংলাদেশ অধিনায়ক মারিয়া মান্ডা।

সাফ অনূর্ধ্ব-১৯ চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে ভারতকে ১-০ গোলে হারায় বাংলাদেশ কমলাপুরের বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ সিপাহী মোস্তফা কামাল স্টেডিয়ামে । ৮০তম মিনিটে জয়সূচক গোলটি করেন আনাই মোগিনি।

বাংলাদেশ অপরাজিত চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পথে টানা দুইবার ভারতের বিপক্ষে জিতল। রাউন্ড রবিন লিগে একই ব্যবধানে প্রতিবেশী দেশটির বিপক্ষে জিতেছিল গোলাম রাব্বানী ছোটনের দল।

স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী পালন করছে দেশ- এমন সময়ে এই সাফল্য দেশের মানুষকে উপহার দিতে পেরে দারুণ খুশি অধিনায়ক মারিয়া।

স্বাধীনতার সুর্বণজয়ন্তী উপলক্ষ্যে সবাইকে আমরা একটা উপহার দিলাম। দেশের মাটিতে খেলা, অনেক দর্শক এসেছিল মাঠে, তাদেরকে আমরা ভালো খেলা উপহার দিলাম। সবাইকে ধন্যবাদ, তারা আমাদের সমর্থন দিয়েছে। আমরা তাদের শিরোপা উপহার দিতে পেরেছি, অনেক ভালো লাগছে।

৫ গোল নিয়ে প্রতিযোগিতার সর্বোচ্চ গোলদাতা হয়েছেন শাহেদা আক্তার রিপা। প্রতিযোগিতার সেরা খেলোয়াড়ের পুরস্কারও জিতেছেন তিনি। প্রত্যাশার প্রতিদান দিতে পারার আনন্দ অনুভব করছেন রিপা।

শিরোপা জিততে পেরে অনেক অনেক ভালো লাগছে। সবাই আমাদেরকে সমর্থন করেছে, আমরাও তার প্রতিদান দিয়েছি। (সর্বোচ্চ গোলদাতা) আসলে প্রত্যাশা করিনি…আল্লাহর রহমতে এটা হয়ে গেছে।

টুর্নামেন্ট জুড়ে মারিয়ার সঙ্গে মাঝমাঠের সুরটা বেঁধেছেন মনিকা চাকমা। কিন্তু কাঙ্ক্ষিত গোল মিলছিল না বলে চিন্তায় পড়ে গিয়েছিলেন তিনিও।

আসলে আমরা মাঠে যখন নেমেছি, আমরা পুরোটা সময় কঠিন পরিশ্রম করেছি। মারিয়ার সঙ্গে আমার বোঝাপড়া খুব ভালো। আমরা চ্যাম্পিয়ন হয়েছি, খুব ভালো লাগছে। (আনাইয়ের শট) যখন গোলকিপার বল গ্রিপ করতে গিয়েছিল, তখন মনে হয়েছিল গোল হবে।

টুর্নামেন্ট একমাত্র দল হিসেবে কোনো গোল হজম করেনি বাংলাদেশ। সতীর্থদের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে রক্ষণ সামলানো আঁখি খাতুন জানালেন দলীয় বন্ধনের কথা।

আসলে কোচ যেভাবে বলেছেন, আমরা সেভাবে খেলার চেষ্টা করেছি। শুরুতে আমার পজিশন ডিফেন্স ছিল না, স্ট্রাইকার বা রাইট উইংয়ে খেলতাম। পরে কোচরা আমাকে যে পজিশনে খেলিয়েছেন, সেখানে খেলেছি।

আমরা অনূর্ধ্ব-১৫, ১৬, ১৭, ১৮ ও ১৯-এই পর্যায়ে একসঙ্গে আছি। ফলে অনেক দিন একসঙ্গে থাকায় আমাদের বোঝাপড়া অনেক।

শিষ্যদের মতোই উচ্ছ্বাসে ভাসছেন কোচ ছোটন। এই সাফল্য মেয়েদের ফুটবলকে অনেক এগিয়ে নিয়ে যাবে বলে বিশ্বাস তার।

এই প্রতিযোগিতায় মেয়েরা দুর্দান্ত খেলেছে। শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত একই ছন্দে খেলেছে। আমাদের আত্মবিশ্বাস ছিল জিতব। ম্যাচে আধিপত্য রেখে খেলেছি। তবে গোল পেতে দেরি হচ্ছিল। অবশেষে গোল এসেছে।

এই সাফল্য অনেক অনুশীলনের ফল। অভিজ্ঞ কিছু খেলোয়াড় ছিল, যারা ম্যাচের গতি ঘুরিয়ে দিয়েছে। এই ফল বাংলাদেশের মেয়েদের ফুটবলে আরও এগিয়ে যাবে। সঠিক পথেই আছে মেয়েদের ফুটবল।