যুক্তরাষ্ট্র থেকে হাতকড়া ও পায়ে বেড়ি নিয়ে ফেরা ভারতীয়দের অভিজ্ঞতা

যুক্তরাষ্ট্র থেকে হাতকড়া ও পায়ে বেড়ি নিয়ে ফেরা ভারতীয়দের অভিজ্ঞতা
 তার বাবা জমি-বাড়ি বন্ধক রেখে যুক্তরাষ্ট্রে পাঠানোর ব্যবস্থা করেছিলেন

হাতকড়া এবং পায়ে বেড়ি পরিয়ে অবৈধ ভারতীয় অভিবাসীদের সামরিক বিমানে করে ফেরত পাঠিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। এ ঘটনা আলোড়ন তৈরি করেছে ভারতজুড়ে। অভিবাসীদের অনেকেই নিজেদের দুরবস্থার কথা সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন। বলেছেন, সফরকালে হাত-পা বাঁধা অবস্থায় দীর্ঘ ৪০ ঘণ্টা কীভাবে কেটেছে তাদের।

হরিয়ানার কুরুক্ষেত্র জেলার বাসিন্দা খুশপ্রীত সিং ছয়মাস আগে যুক্তরাষ্ট্রে গিয়েছিলেন। খরচ হয়েছিলেন ৪৫ লাখ টাকা যা জোগাড় করতে তার বাবা নিজের গবাদি পশু, জমি ও বাড়ি বন্ধক দেন।

২২ জানুয়ারি সীমান্ত অতিক্রম করেন খুশপ্রীত সিং। দোসরা ফেব্রুয়ারি তাকে ফেরত পাঠানোর ব্যবস্থা শুরু হয়।

তিনি বলেছেন, "জল খেয়ে জঙ্গল পার হও। যে পিছনে রয়ে যাচ্ছে, তাকে পেছনে ফিরে দেখার দরকার নেই। শুধু নিজের পথ ধরে এগিয়ে চলো। যে গাইডের পদাঙ্ক অনুসরণ করে চলতে পারবে, একমাত্র সেই পার হতে পারবে। যে পিছনে পড়ে থাকল, সে চিরতরে পেছনেই পড়ে থাকবে।"

তবে শেষরক্ষা হয়নি। ধরা পড়ার পর খুশপ্রীত সিংকে ১২ দিন ট্রানজিট ক্যাম্পে রাখা হয়েছিল।

সেই অভিজ্ঞতার কথা জানিয়ে ১৮ বছর বয়সী খুশপ্রীত বলেছেন, "প্রথম দিন ওরা বলেছিল, আমাদের ভারতে ফেরত পাঠাবে। ভেবেছিলাম আমাদের সঙ্গে মজা করছে। ওদের গম্ভীর দেখালেও আমরা ভেবেছিলাম ওরা মশকরা করছে।"
যুক্তরাষ্ট্র থেকে হাতকড়া ও পায়ে বেড়ি নিয়ে ফেরা খুশপ্রীত সিং
খুশপ্রীত সিং
"ওরা যখন আমাদের হাতকড়া পরায়, তখন আমরা ঘটনা অনুধাবন করতে শুরু করি। প্রথমে জানায় যে আমাদের ওয়েলকাম সেন্টারে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। আমরা ভেবেছিলাম সেখানে পৌঁছানোর পর ছেড়ে দেওয়া হবে। কিন্তু নামার পর দেখলাম, সামনে সামরিক বিমান দাঁড়িয়ে।"

এসব অভিজ্ঞতা বলতে গিয়ে বিচলিত হয়ে পড়েছিলেন খুশপ্রীত সিং।

বুধবার যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক বিমানে করে যে ১০৪ ভারতীয়কে ফেরত পাঠানো হয়, তাদের একজন এই তরুণ।

তাকে যুক্তরাষ্ট্রে পাঠানোর জন্য ইতিমধ্যে বিপুল অর্থ ব্যয় করে ফেলেছে তার পরিবার। খুশপ্রীতের আশা, "সব হারিয়েছি। যদি টাকা ফেরত পাই তাহলে এখানেই কিছু একটা কাজ করব। আর বাইরের দিকে তাকাব না।"

তার বাবা কাঁদতে কাঁদতে বলেন, "আমাদের টাকা ফেরত দিয়ে দিক। পুরোটা না হলেও অন্তত অর্ধেক দিক।"

Share this:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

 
স্বত্ব © ২০২৫ রোদেলা বিকেল 24 | অনলাইন সংবাদপত্র (পত্রিকা). যোগাযোগ রোদেলা বিকেল 24